মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন
কক্সবাজার থেকে নুরুল আবছার, কালের খবর :
ছোটখাটো অপরাধ থেকে শীর্ষ পর্যায়ে চলে গেছে কক্সবাজারের রামু তুলা বাগানের অনেক অপরাধী। ছিনতাইকারী থেকে হয়েছে ইয়াবা কারবারি। অপরাধ জগতে গড়ে তুলেছেন সাম্রাজ্য। এ যেন আলাদীনের চেরাগ।
অপরাধের পাল্লা ভারী হওয়ায় আত্মগোপনে থেকে কেউ কেউ অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে গেলেও অনেকে সমাজে ‘ভালো’ মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। এরমধ্যে কোন কোন ইয়াবা ব্যবসায়ী কৃষি ও প্রাণী সম্পদ উদ্যোক্তা কিন্তু এতসব আয়োজনেও কি রেহায় মিলবে? এরই ধারাবাহিকতায় এবার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
কক্সবাজার রামু তোলা বাগানের ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শহর আলীর পুত্র মোহাম্মদ মিজান প্রকাশ ইয়াবা মিজানের বিরুদ্ধে। এখন প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা ব্যবসা তার রয়েছে একা দিক সেন্ডিকেট তাদের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এসব ইয়াবার চালান আদান-প্রদান করা হয়।
বছর খানিক আগেও কক্সবাজার সুগন্ধি পয়েন্ট থেকে ২ হাজার ইয়াবা নিয়ে আটক হয়েছিল এই মিজান, জামিনে বের হয়ে সে আবারো সক্রিয় ইয়াবা ব্যবসায়, পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা ব্যবসা,
অল্প বয়সে অল্পদিনে বনে যান কোটিপতি।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, সে দেশের একমাত্র জঘন্য ইয়াবা ব্যবসার মতো অপরাধে জড়িত রয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সে উখিয়া সীমান্ত উপজেলা থেকে বড় বড় ইয়াবার চালান সারা বাংলাদেশে পাঠায় বিভিন্ন সুকৌশলে। এই পর্যন্ত তার ইয়াবা নিয়ে জেল খেটে যাচ্ছে অনেকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার এক ব্যক্তি জানান, সেই এলাকায় বিভিন্ন কিশোর গ্যাং হতে বড় বড় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সাথে তার মেলামেশা শুধু তাই নয় সেই ইয়াবা ব্যবসার কথা তার ইমু হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তার এতকিছু নিয়ে নিজ এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বিশেষ সুত্রে জানা যায়, মিজানের ইয়াবার চালানগুলো বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দিতে রয়েছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের তার সক্রিয় সদস্য।
তার এলাকায় তার ঘরে প্রতিদিন দেখা মিলে নিত্য নতুন মানুষের, প্রতিনিয়ত ভীড় জমায় তার ঘরে অপরিচিত লোকজন, কক্সবাজার শহরের হোটেল মোটেল জোনেও রয়েছে তার একাধিক ইয়াবার সিন্ডিকেট, ইয়াবার দাপটে তার রাজত্ব চলে পুরো এলাকায়, পুরো এলেখা জুড়ে এখন আতঙ্কের নাম মিজান প্রকাশ ইয়াবা মিজান।
তার দৃশ্য মান কিছু না থাকলেও এখন সেই কোটি টাকার মালিক তার রয়েছে আলিশান বাড়ি এবং একাধিক জমি।
তার একান্ত সহযোগী দানুর ছেলে রুবেল একাধিক মাদক মামলার আসামি, ইয়াবা নিয়ে ঢাকায় একাধিক বার আটক হয়। রুবেল সাথে মোটো ফোনে কথা বলে জানা যায়, রুবেল জানান আমি তার সাথে ছিলাম তবে এখন আমি তার সাথে নাই, আমি কক্সবাজার থেকে এখন ঢাকায় থাকি আমি ঢাকায় চাকরি করি তবে মিজান আমার সম্পর্কে চাচা লাগে পরে রুবেল সাংবাদিকদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করার জন্য চেষ্টা করে এবং নিউজ না করার জন্য বিভিন্ন কায়দায় বাধা সৃষ্টি করে।
যেখানে সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে সেখানে উখিয়া সীমান্ত উপজেলার এখনো কোনো ধরনের জিরো টলারেন্স হয়নি যেখানে বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, কোস্ট গার্ড, সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবুও সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে পারেনি। সরকার কক্সবাজার সীমান্তে বিজিবির টহল,তল্লাশি ও নজরদারি বাড়ানোর ফলে সেখানে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা, ফেনসিডিল ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারির ঘোষনা করেছে । যে কারণে মাদকদ্রব্যের অনুপ্রবেশ কমে এসেছে। কক্সবাজারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তল্লাশি চৌকিতে বিজিবির নেতৃত্বে প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়েছে। কোস্ট গার্ড নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি কক্সবাজার,উখিয়া টেকনাফ, সেন্ট মার্টিন ও শাহপরী দ্বীপে ইয়াবাবিরোধী অভিযান।
এর পরেও মিজানের মতো ইয়াবা কারবারিরা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন কায়দায় ইয়াবার বড় বড় চালান দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে।
এই বিষয়ে তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি আগে ইয়াবা ব্যবসা করতাম সেটা ঠিক, আমি একবার কক্সবাজার সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে ইয়াবা নিয়ে আটক হয়েছি, সেটাও সত্য, তবে এখন আমি ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত নাই, আমার এলাকার কিছু লোক আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। পরে সেই সাংবাদিক কে ম্যানেজ করার জন্য দেখা করার কথা বলে এবং তার নামে নিউজ করলে মামলা দেওয়ার হুমকি ও দেয়।
এই বিষয়ে রামু খুনিয়া পালং ৯নং ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ড়ের ইউ পি সদস্য জানে আলমের সাথে এ বিষয়ে কথা বলে জানা যায়, তিনি বলেন, মিজান এবং রুবেল ইয়াবার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি আমি শুনেছি , এই বিষয়ে আমি তাদেরকে কঠোর ভাবে একাধিক বার নিষেধ করি, এবং আমার এলাকায় কোন মাদক ব্যবসী ও মানব প্রচার কারী দের স্থান নেই, যারা ইয়াবা সাথে জড়িত তারা দেশের শত্রু এবং সমাজের শত্রু , আমার এলাকা মাদক মুক্ত রাখতে সর্বাবস্থায় আমি প্রস্তুত, পাশাপাশি প্রশাসন এবং সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতা কামনা করছি।
পাশাপাশি সচেতন মহল ও স্হানীয়দের দাবি এসব ইয়াবা ব্যবসীদের বিরুদ্ধে জোরালো প্রদক্কেপ গ্রহণ করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান এবং মাদক মুক্ত সমাজ, ও মাদক মুক্ত দেশ গড়তে প্রত্যেক প্রশাসনের ভুমিকা অপরিসীম বলে মনে করেন তারা।